১০ম বার্ষিক এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসবের উদ্বোধন করলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও সুবোধ সরকার

ভারতের প্রথম বাংলা সাহিত্য উৎসব, এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসবের (এবিএসইউ) ১০ম বার্ষিকীর উদ্বোধন হল শুক্রবার। এই সাহিত্য উৎসবের উদযাপন শুরু হল শব্দ ও ভাষার প্রাণবন্ত ঐক্যের মধ্যে দিয়ে। শুক্রবার কলকাতার ঐতিহ্যশালী অক্সফোর্ড বুকস্টোরে সাহিত্য জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও সুবোধ সরকার এবং উৎসব পরিচালক তথা অক্সফোর্ড বুকস্টোরের সিইও স্বাগত সেনগুপ্ত উৎসবের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর একটি অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক আলোচনা হয় এবং যেখানে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউট অফ ল্যাংগুয়েজ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ (আইএলএসআর)- এর পরিচালক  ডঃ স্বাতী গুহ, এবং অধ্যাপক অমিতাভ দাস, অনুপম রায়, প্রচেত গুপ্ত এবং কিরণ দত্ত। ধ্রুপদী বাংলা ভাষাই ছিল এই অধিবেশনের মূল বিষয় যার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। পাশাপাশি আলোচনা হয় বাংলা ভাষার ইতিহাস থেকে সমসাময়িক তাৎপর্য, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ধ্রপদী বাংলা ভাষার ভূমিকা থেকে ডিজিটাল যুগে এই ভাষার প্রাসঙ্গিকতা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তার প্রভাব নিয়েও।

১০ম এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসবের আসন্ন অধিবেশনগুলিতে আলোচনা হবে নানা ধরনের আকর্ষণীয় বিষয়ে। যার মধ্যে বাংলা সাহিত্য উৎসবে নজর কাড়বে সিনেমা জগতের পথিকৃৎদের শতবার্ষিকী সম্মান। আর এই সম্মান জানানো হচ্ছে বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন ও তপন সিনহার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের মধ্য দিয়ে।

এর পাশাপাশি থাকছে সাহিত্য সম্মানও। এই সম্মান জানানো হবে বিশিষ্ট সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যালের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের মধ্য দিয়ে।

এছাড়াও থাকছে ভাষিক উদযাপন। কারণ, বাংলা ভাষা ইতিমধ্যেই ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মনোজ্ঞ আলোচনার অধিবেশনের মধ্যে দিয়ে এই  ভাষার বহু বিচিত্র, বর্ণময় সম্ভারের উপস্থাপনা করা হবে এবারের এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসবে।

এছাড়াও থাকছে বিষয়ভিত্তিক অধিবেশন। যেখানে আলোচনা হবে শিশু সাহিত্য থেকে রাজনীতির জটিলতা, সিনেমা, কবিতা ও গান, খেলা এবং বাংলার সুখাদ্যের বিচিত্র স্বাদের জগতের মতো একাধিক বিষয়ে।

উৎসবের দ্বিতীয় দিনে বহুবিধ বিষয়ে অধিবেশন আছে। যার মধ্যে রয়েছে বাঙালির মিষ্টি ও খাওয়াদাওয়া সংক্রান্ত আলোচনা, রাজনীতি এবং শিশুসাহিত্য। এছাড়াও ওই দিনে জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সম্মান জানানো হবে বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা তপন সিনহাকে। ভারতীয় চলচ্চিত্রে তাঁর ঐতিহ্য এবং অবদান নিয়েও আলোচনা হবে। 

তৃতীয় দিনের শুরুতে থাকবে শিশুদের জন্য আয়োজিত শব্দ নিয়ে খেলার একটা আসর এবং বড়দের জন্য অনু গল্প ও কবিতা পাঠের আসর। এছাড়াও আলোচনার থিম হিসাবে থাকছে কবিতা, খেলাধুলো এবং রাজনীতি। এদিন বিকেলে থাকছে দুটি আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেন এবং বিখ্যাত লেখক নারায়ণ সান্যালের শতবার্ষিকী উদযাপন। এই অধিবেশনগুলিতে বাংলা সিনেমা তথা সাহিত্যে তাঁদের অবদান হবে আলোচনার মূল বিষয়।

১৬ এবং ১৭ ই নভেম্বর কথোপকথনে থাকছেন প্রচেত গুপ্ত, অঞ্জন দত্ত, শতাব্দী রায়, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, ভগীরথ মিশ্র, অভীক মজুমদার, সুধাংশু দে, তপন বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম ভট্টাচার্য, ডঃ স্বাতী গুহ, অলোক প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, শিলাদিত্য সেন, কিরণ দত্ত, দীপান্বিতা রায়, রূপক সাহা, সব্যসাচী সরকার, অণিমা ব্রহ্ম, সিজার বাগচী, হিন্দোল ভট্টাচার্য এবং শ্যামলী আচার্য সহ অন্যরা।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, অক্সফোর্ড বুকস্টোরে ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে ভারতের প্রথম বাংলা সাহিত্য উৎসব। এই উৎসব বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে দৃশ্যমান আলোচনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করে। দশম বর্ষে এই উৎসবে লেখক, কবি, পরিচালক, নাট্যকার, অভিনেতা, সাংবাদিক, আমলা, গবেষক, শিক্ষাবিদ, সঙ্গীতজ্ঞ, সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্বসহ সাংস্কৃতিক জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা অংশগ্রহণ করেছেন। উৎসবের জনপ্রিয়তা এবং বিশ্বব্যাপী বাংলা সাহিত্য প্রেমীদের কথা মাথায় রেখে, ১৫, ১৬ এবং ১৭ ই নভেম্বর সাহিত্য উৎসবের সমস্ত  অধিবেশন ফেসবুক এবং ইউটিউবে সরাসরি লাইভ সম্প্রচারিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty + twelve =