ভারতে মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের হদিশ মিললেও আতঙ্কের কিছু নেই বলে জানাল স্বাস্থ্যমন্ত্রক

ভারতে মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের হদিশ মিলল। বিদেশ ফেরত এক যুবক মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে। সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এও জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্সের ক্লাড ১ স্ট্রেন নিয়ে যে সতর্কতা জারি করেছে, সেই স্ট্রেন পাওয়া যায়নি ওই যুবকের দেহে। পশ্চিম আফ্রিকার ক্লাড ২ ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে তাঁর শরীরে। ফলে এই নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই।

আফ্রিকা ও ইউরোপের একাধিক দেশে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ওই যুবক মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব রয়েছে, আফ্রিকার এমন একটি দেশ থেকে ভারতে ফিরেছেন। তাঁর শরীরে মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ দেখে চিকিৎসা শুরু হয়। এবং তিনি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত কি না, তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষা করে জানা যায়, ওই যুবক এমপক্সে আক্রান্ত। ফলে চিকিৎসক এবং আমজনতার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এই মাঙ্কিপক্স। মাঙ্কিপক্সের সঙ্গে বাঁদরের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে।

এই প্রসঙ্গে চিকিৎসকেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, স্মলপক্স ভাইরাসের সমগোত্রের মাঙ্কিপক্স (বা এমপক্স) ভাইরাস। ১৯৫৮ সালে প্রথম এই ভাইরাস চিহ্নিত হয়। ল্যাবরেটরিতে বাঁদরের মধ্যে এই ভাইরাস পাওয়া যায়। সেইজন্য এই ভাইরাসের নাম দেওয়া হয় মাঙ্কিপক্স। কিন্তু বাঁদরের মধ্যে এই ভাইরাস কীভাবে এল, তা তখনও জানা যায়নি। মানুষের মধ্যে প্রথম এই ভাইরাস পাওয়া যায় ১৯৭০ সালে। কঙ্গোতে।

মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ সম্পর্কে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হলে চামড়ায় ব়্যাশ দেখা যাবে। জ্বর, মাথার যন্ত্রণা, পিঠে ব্যথা, পেশী ব্যথা হবে। দুই থেকে ৪ সপ্তাহ থাকবে এই লক্ষণগুলি।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের প্রভাব খুব বেশি হয় না। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তরা সহজেই সুস্থ হয়ে যান। কিছুক্ষেত্রে এই ভাইরাসের প্রভাব মারাত্মক হয়। তখন অ্যান্টি-ভাইরাস চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।

পাশাপাশি চিকিৎসকরা এও জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির লালা, ঘাম থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস থেকেও অন্যের দেহে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত মহিলা গর্ভবতী হলে, তাঁর গর্ভস্থ সন্তান মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হতে পারে।

এদিকে সোমবারই রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে মাঙ্কিপক্স নিয়ে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকে নির্দিষ্ট হাসপাতাল চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে, যেখানে সন্দেহজনক রোগীকে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বলে যাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের স্ক্রিনিং ও পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − six =