পঞ্চায়েতে এবার বেশ কিছু আসনে বিশেষ নজর বামদের। শুধু বামেদের নয়, বঙ্গ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সবারই। কারণ, এই পাঁচ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন এসএফআই-এর যুগ্ম সম্পাদক দীপ্সিতা ধরের মা দীপিকা ধর, এসএফআই নেতা প্রতীক উর রহমানের স্ত্রী শিরিন সুলতানা, নদিয়ার কলেজ পড়ুয়া সৌরনীল সরকার, অন্যতম তরুণ তুর্কী প্রার্থী মৌসুমী সরকার আর এর সঙ্গে এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির ১৪ জন সদস্য।
হাওড়া জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন দীপিকা ধর, যিনি এসএফআই-এর যুগ্ম সম্পাদক দীপ্সিতা ধরের মা। বালি বিধানসভা আসন থেকে ২০২১ সালে বামেদের বাজি ছিলেন দীপ্সিতা। প্রচার পর্বে ব্যাপক প্রভাব ফেললেও, ভোটবাক্সে তা প্রতিফলিত করতে ব্যর্থ হন দীপ্সিতা। তবে ভোটের ময়দানে তিনি জানান, ‘কঠিন সময়ে লাল পার্টি করার ধক আছে যাদের, তারাই আমাদের সাথী, তারাই আমাদের কমরেড।‘ মায়ের হয়ে প্রচারে ফের দেখা যেতে পারে দীপ্সিতাকে। ফের শোনা যেতে পারে তাঁর ঝাঁঝালো বক্তৃতা। তবে মাকে জিতিয়ে আনতে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার।
এদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা র ৫৯ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে মনোনয়ন জমা করেছেন শিরিন সুলতানা। তিনি এসএফআই নেতা প্রতীক উর রহমানের স্ত্রীও বটে। ২০১৭ সালে শিরিন সুলতানা ছিলেন জেলা ছাত্রী কনভেনশানের কনভেনর। বরাবরই ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তিনি। প্রকীক উরের কথায় অবশ্য, ‘সহধর্মিণী! আমি বলব সহযোদ্ধা। প্রচণ্ড সন্ত্রাসের আবহে নমিনেশন জমা করেছে শিরিন। মনোনয়ন তুলে নেওয়ার মারাত্মক চাপ ছিল। তার মধ্যে টিকে থাকার লড়াইকে কুর্নিশ। মাধবীলতারাই মেরুদণ্ড হয়ে পিছনে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।’
এদিকে আবার নদিয়ায় তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে বামেদের বাজি কলেজ পড়ুয়া সৌরনীল সরকার। এই তরুণ তুর্কি বাবাকে লুকিয়েই মনোনয়ন জমা করেছে সে। মা আতঙ্কিত। ছেলেকে তাঁদের প্রশ্ন, ‘তুই জানিস, কার বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছিস?’ ছেলের জবাব, ‘নেতা নয়, আমাদের লড়াইটা নীতির বিরুদ্ধে।’ নজর রয়েছে আরও এক তরুণ তুর্কি বারাসত ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ১৮ নম্বর আসনে মৌসুমী সরকারের ওপরেও। ২৫ বছরের মৌসুমী জানান, ‘পঞ্চায়েত ভোটে আমার নিজের চোখে দেখা শাসকদল কী পরিমাণ সন্ত্রাস চালিয়েছে। আমি যে এলাকা থেকে উঠে আসছি সেখানে মানুষ কী চান প্রত্যেকবারেই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু গতবার জোরজুলুম করেই শাসকদল জিতেছে। তবে আশা করা যায় যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হয়, আমাদের এলাকায় জয় আসবেই।‘ SjF এরই সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পঞ্চায়েতে লড়ছেন এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির ১৪ জন সদস্যও। এই তালিকায় রয়েছেন, কোচবিহার ডেলা পরিষদের ১৩ নম্বর আসনের প্রার্থী প্রণয় কার্য্যা, ভেরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২৬ নম্বর আসনে মৈনাক মুখোপাধ্যায়, ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ১৭ নম্বর আসনের প্রার্থী মধুশ্রী মজুমদার, নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৪৯ নম্বর আসনের প্রার্থী টিউলিপ ঘোষ, মগরাহাট ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ২৫ নম্বর আসনের প্রার্থী রামিজ রাজা। এছাড়াও আমতা ২ নং ব্লকের কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আমতা ২ নং পঞ্চায়েত সমিতির ৪১ নং আসনে প্রয়াত ছাত্র নেতা আনিস খানের মেজ দাদা শামসুদ্দিন খান সিপিআইএমের এবার রাজনৈতিক ময়দানে।