বিপদে আপনার পাশে রয়েছে তৃণমূলই, নদিয়াতে দাঁড়িয়ে আশ্বাস অভিষেকের

নব জোয়ারের পর এবার  পঞ্চায়েতের প্রচারে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে সভা করলেন তিনি। নবজোয়ার কর্মসূচিতেই তাঁর এখানে আসার কথা ছিল। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে সেই সভা বাতিল করা হয়। এবার ঠিক একই জায়াগায় সভা করলেন অভিষেক।

এদিন এলাকার মানুষদের মনে করিয়ে দেন, ২০১৯-২১ -এর নির্বাচনের কথা। বলেন, ‘আপনারা ভারতীয় জনতা পার্টিকে বিশ্বাস করেছেন, বিশ্বাসের মূল্য এরা দিতে পারেনি। তাই এবার শুনে নয়, দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ২০১৯ সালে বিজেপি প্রার্থী ২ লক্ষের বেশি ব্যবধানে জিতেছিল, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে আমরা শুধুমাত্র নবদ্বীপ জিতেছিলাম। পরবর্তীকালে শান্তিপুরে উপ নির্বাচন হয়েছিল, নবদ্বীপ ও শান্তিপুর ছাড়া বাকি আসনগুলোতে বিজেপির প্রার্থীরা জিতেছিল। আপনারা তিন-চার বছর ধরে বিজেপি-র প্রার্থীদের জিতিয়েছেন।‘ এরই রেশ ধরে অভিষেকের প্রশ্ন, ‘আপনি দেখান জগন্নাথ সরকার এই চার বছরে আপনাদের সঙ্গে কথা বৈঠক করেছেন? কী কাজ করেছেন এলাকায়?’ সঙ্গে এও বলেন, ‘তৃণমূল হয়তো আপনার সুখে ছিল না, দুঃখে-বিপদে রয়েছে। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে কোনও সমস্যা হলে সাহায্য করে তৃণমূলেরই ছেলে। বিজেপির কোনও ছেলে নয়। রাতে বাড়িতে আগুন লাগলে দমকল নিয়ে তৃণমূলের ছেলেগুলোই দৌঁড়য়। বিজেপির ছেলে নয়। বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুল্যান্সটা ডাকার কাজও তৃণমূল করে। বহিরাগতদের নেতাদের আপনারা চোখে দেখতে পান না।‘ এরই রেশ ধরে অভিষেকের প্রশ্ন, ‘একদিকে, আমাদের সরকার দিচ্ছে, আর অন্যদিকে দিল্লির সরকার নিচ্ছে। আপনি কাকে ভোট দেবেন?’ সঙ্গে এও বলেন, ‘একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রেখে, বাংলার মানুষকে শোষণ করতে চাইছে।‘ সঙ্গে তুলে ধরেন, সিএএ-এর কথাও। এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘বলেছিল  সিএএ করব। বিল পাশ হয়েছে। কিন্তু সেটা বলার পর ৪২ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিলের রুল ফ্রেম হয়নি।‘ একইসঙ্গে মোদির নাম না করে হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘মানুষের হাতে ইভিএমের বোতাম। মানুষ যদি ঠিক করে আপনাকে টেনে হিঁচড়ে নীচে নামাতে ১০ সেকেন্ডও সময় লাগবে না।‘

তৃণমূল দল যে সৎ-পথেই থাকে তা বোঝাতে টেনে আনেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও। জানান, ‘আমরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও দল থেকে বার করেছি। মন্ত্রিত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’ সঙ্গে এ প্রশ্ন তুলে জানতে চান, ‘অন্যদিকে বিজেপি কী করছে? যাদেরকে টিভিতে দেখা গিয়েছে, খবরের কাগজে মুড়িয়ে টাকা নিয়েছে, তাঁদেরকে মাথায় বসিয়েছে।‘

কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে অভিষেকের মন্তব্য, ‘আমি হাইকোর্টকে ধন্যবাদ জানাই, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েছে। আমি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে কৃতজ্ঞ। এক একটা বুথের বাইরে ৫ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করুন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, একুশ সালে তৃণমূল ভোট পেয়েছিল ৪৮ শতাংশ, আর বিজেপি পেয়েছিল ৩৮ শতাংশ। এবার ব্যবধান ১৫ শতাংশ হবে। তৃণমূলের ভোট বাড়বে। বিজেপির কমবে। আমি এই কথা এই মাটিতে দাঁড়িয়ে বলে যাচ্ছি।  যেদিন ভোটের ফল বেরোবে, তখন দেখে নেবেন। তৃণমূল বিশুদ্ধ লোহা। যত পেটাবেন, তত বাড়বে।‘

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + five =