আইআইটি গুয়াহাটিতে অস্বাভাবিক মৃত্যু এক ছাত্রের

পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি গুয়াহাটিতে (আইআইটি-জি)। সোমবার সেখান থেকে ২১ বছর বয়সি এক ছাত্রের মৃতদেহ তাঁর হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, আইআইটি-র ব্রহ্মপুত্র হস্টেলের একটি ঘর থেকে দেহটি উদ্ধার করা হয় এবং তা ময়নাতদন্তের জন্য গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (জিএমসিএইচ) পাঠানো হয়েছে।

কামরূপ জেলার পুলিশ সুপার রঞ্জন ভুঁইয়া জানিয়েছেন, মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে। তাঁর কথায়, ‘মৃত্যুর বিষয়ে এখনই বিস্তারিত কিছু জানানো সম্ভব হবে না, কারণ আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি।’ আইআইটি-জি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা এই মৃত্যুতে শোকাহত। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা এই ছাত্রের কেন অস্বাভাবিক মৃত্যু হলো, তা বিশদে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২১ বছরের ওই ছাত্র এই প্রতিষ্ঠানের বি-টেক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) নিয়ে পড়াশুনা করছিলেন। তবে এই মৃত্যুর ঘটনায় সেখানকার পড়ুয়ারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। একইসঙ্গে তাঁরা প্রতিষ্ঠানের মেন্টাল হেলথ সাপোর্ট ও স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার নিয়ে প্রশ্নও তোলেন। তাঁদের বক্তব্য, এই নিয়ে এই বছর চার জন পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে অন্তত দু’জন মানসিক চাপে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এই প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট সচেতন বলে যে দাবি করে, তার কার্যকারিতা কোথায় তা নিয়েই। প্রশ্ন ওঠে, কেন পড়ুয়ারা সেই সাপোর্ট পাচ্ছেন না সে ব্যাপারেও। সোমবার রাত পর্যন্ত ওই ছাত্র আত্মহত্যা করেছেন কি না স্পষ্ট নয়। তবে তাঁর একাধিক সহপাঠী জানিয়েছেন, তিনি মানসিক ভাবে প্রবল চাপে ছিলেন।

আইআইটি জি কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমাদের সব রকম কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। ক্লাসের পর কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। হস্টেল রুমের দরজাতেও সেই সংক্রান্ত কিউআর কোড দেওয়া রয়েছে।’ কী ভাবে ছাত্রছাত্রীরা সেই সাহায্য গ্রহণে আরও আগ্রহী হন, সচেতন হন তা নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

চলতি বছরের এপ্রিলে এই ইনস্টিটিউটেই ২০ বছর বয়সি এক ছাত্রের দেহ মিলেছিল। তিনিও বি-টেক ছাত্র ছিলেন। তাঁর পরিবারের লোকজন অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে তাঁকে র‍্যাগিং করা হতো। তার পরে তাঁকে খুন করা হয়েছিল। ওই ছাত্রের অভিভাবকরা এই নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবিও জানিয়েছিলেন। ছাত্রের বাবার দাবি ছিল, এটা খুনের ঘটনা। আর কর্তৃপক্ষ তা আত্মহত্যা বলে চালাতে চাইছেন। এ বছর জানুয়ারিতে আইআইটি-জি-তে এক ছাত্রীরও অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × three =