পঞ্চায়েত নির্বাচনে মৃতের সংখ্যা ৩, দাবি রাজীব সিনহার, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট ৬৬.২৮ শতাংশ

শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৬৬.২৮ শতাংশ। এমনই বলছে নির্বাচন কমিশনের তথ্য। শনিবার বিকাল ৫টার পরিসংখ্য়ান অনুসারে, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে গড়ে ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। এর মধ্যে আলিপুরদুয়ারে ৬৩.১১ শতাংশ, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৬১.৯৩ শতাংশ, কোচবিহারে  ৬৩.৮৪ শতাংশ, জলপাইগুড়িতে ৬২.২৪ শতাংশ, উত্তর দিনাজপুরে ৫৬.৮৭ শতাংশ, মালদহে ৬৩.৪৪ শতাংশ, কালিম্পংয়ে ৫৬.৪৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। অন্যদিকে ভোটের হারে পিছিয়ে নেই দক্ষিণবঙ্গও। সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। এদিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে ৬৫.৯৫ শতাংশ, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭৯.১৫ শতাংশ, পুরুলিয়ায় ৫৯.৮৫ শতাংশ, বাঁকুড়ায় ৫৯.৮৩ শতাংশ, বীরভূম ৬৮.৮৮ শতাংশ, ঝাড়গ্রাম ৬৪.২৬ শতাংশ, হুগলিতে ৬৫.৪৩ শতাংশ, হাওড়ায় ৬৭.৫৮ শতাংশ, উত্তর চব্বিশ পরগনায় ৬৭.৮৮ শতাংশ, পশ্চিম বর্ধমানে ৬৫.৮৫ শতাংশ, নদিয়ায় ৬৮.৭২ শতাংশ, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় ৬৫.৪০ শতাংশ, পূর্ব মেদিনীপুরে ৬৭.২৩ শতাংশ, পূব বর্ধমানে ৬৮.৯০ শতাংশ  ভোট পড়েছে।

তবে বিরোধী শিবির থেকে অভিযোগে রক্তাক্ত  হল পঞ্চায়েত নির্বাচন। বেলা যত গড়িয়েছে ততই বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানান, ‘ফিল্ড থেকে যে রিপোর্ট আসছে তাতে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৩ জনের। এদিকে শনিবার দুপুর তিনটে পর্যন্ত রাজ্যে নির্বাচনী সন্ত্রাসে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। যদিও রাজীব সিনহার দাবি, ভোট চলাকালীন মাত্র তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, কেউ কেউ ব্যালট বাক্স নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে আবার অনেক জায়গায় দেদার ছাপ্পা পড়েছে। নির্বাচন কমিশনারের অবশ্য দাবি, ‘উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ এই কয়েকটি জেলাতে গণ্ডগোল হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের হাতে, যেখানে যেখানে অভিযোগ আসছে আমরা সেখানে সমাধান করার চেষ্টা করছি। পুলিশ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই মামলাগুলির তদন্ত  করছে৷ আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছি। কোথায় কোথায় গণ্ডগোল হয়েছে তার সমাধান সূত্র বের করার জন্য। আর ফিল্ড থেকে আসা রিপোর্ট অনুসারে পদক্ষেপ করছি। এখনও পর্যন্ত ১৩০০ অভিযোগ জমা পড়েছে। ৬০০-র মতো অভিযোগের আমরা সমাধান করেছি।‘ বরং অশান্তির দায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেই চাপিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার৷ অভিযোগ করেছেন, সময় মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী না আসার কারণেই অশান্তি বেড়েছে।

পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনার এও দাবি করেন, যেখান যেখান থেকে বেশি গণ্ডগোলের খবর এসেছে, সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে রাজীব সিনহা আরও জানান,’সন্ত্রাস যেখানে হয়েছে সেখানে তা সামাল দেওয়া জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব৷ আমার দায়িত্ব পুরো বিষয়টিকে খতিয়ে দেখে তদন্ত করে তার সঠিক দিক নির্ণয় করা। কেন্দ্রীয় বাহিনী এই রাজ্যে আসা নিয়ে কোথাও কোনও কোন খামতি আমরা রাখিনি।‘

কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকে আঙুল তুলে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘২৫ জুন  থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী নিজেরাই এই রাজ্যে আসার জন্য  অপেক্ষা করেছে। কেন এবং কী কারণে, সেটা এখন পুরো বলা সম্ভব নয়। ২৫ তারিখে আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর আসা নিয়ে রিকুইজিশন জমা করেছি। যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী ২৭ তারিখের মধ্যে রাজ্যে এসে যেত তাহলে এত সন্ত্রাস বা এই ধরনের সমস্যা সম্মুখীন আমাদের হতে হত না। শেষ ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে যে চিঠি রাজ্যে এসে পৌঁছেছে তাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে ২৫ জুনের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।‘

সঙ্গে রাজীব সিনহার সংযোজন, ‘শুক্রবার রাত পর্যন্ত যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে এসে পৌঁছেছে, তাদের মোতায়েন করা হয়ে গিয়েছে। রবিবার এই নির্বাচনের স্ক্রুটিনি হবে । এই স্ক্রুটিনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রিটার্নিং অফিসাররা থাকবেন। এই ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যে সমস্ত কার্যকলাপ যুক্ত আছে সবটাই আলোচনায় তুলে ধরা হবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − two =