রাজভবনের নয়া নির্দেশিকাকে কেন্দ্র করে চরমে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত

রাজভবনের নয়া নির্দেশিকাকে কেন্দ্র করে ফের চরমে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। কারণ, রাজভবনের  নয়া নির্দেশিকা নিয়ে তৈরি হয়েছে তাতে রাজভবনের তরফ থেকে বলা হয়েছে অন্তবর্তী উপাচার্যের নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে আধিকারিকদের। রাজ্যের কোনও নির্দেশ পালন করবেন না। এদিকে অন্তবর্তী উপাচার্যদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। আর এখানেই শিক্ষাবিদদের প্রশ্ন, রাজ্য উপর চাপ বাড়াতেই রাজভবনের তরফ থেকে পাল্টা এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে কি না তা নিয়েই।

প্রসঙ্গত, উপাচার্যহীন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভিসির দায়িত্ব সামলাবেন খোদ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কয়েকদিন আগেই রাজ্যপাল স্বয়ং জানিয়েছিলেন তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা। যা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয় শিক্ষামহলে। এমনকী শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু স্পষ্ট হুমকি দিয়েছিলেন, এই ইস্যুতে তিনি শীর্ষ আদালতেরও স্মরণাপন্ন হবেন। এদিকে পড়ুয়াদের নানাবিধ সমস্যার কথা মাথায় রেখে রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত বলে রাজভবনের তরফে জানানো হয়।

এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল রবিববার জানান, ‘বিভ্রান্তি দূর করার লক্ষ্যেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। আচার্য নয়, রাজভবন থেকে  নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।  উপাচার্যদের কাজ করতে যাতে কোন অসুবিধা না হয় সেই উদ্দেশ্যেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘আচার্য উপাচার্যের ভূমিকা পালন করছে না, করতে পারে না, করা উচিত নয়। পড়ুয়াদের শংসাপত্র পেতে যাতে অসুবিধা না হয়, এই বিশেষ ক্ষেত্রেই পড়ুয়াদের বিশেষ দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।’

এদিকে রাজভবনের এই নির্দেশিকা নিয়ে বাংলার রাজনৈতিক মহলেও চলছে জোর চাপনউতোর। যদিও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ‘রাজ্যপাল আইন মেনেই করেছেন। আইনে হয়তো সেই ক্ষমতা আচার্যকে দেওয়া আছে।’ একই সুর শোনা গেছে বিজেপির অপর এক সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের গলাতেও। তিনিও এই প্রসঙ্গে জানান, ‘রাজ্যপাল ঠিক করেছেন।’ তবে উল্টো সুর বাম নেতাদের গলায়। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দেগে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্য়ালয়ে লেখাপড়ার বারোটা বেজে গিয়েছে। উপাচার্য কে হবেন? রাজ্যপাল হবে। তার মানে, রাজ্যপাল উপাচার্য হিসাবে শুধু তাঁর কথাই শুনবেন। আর কারও কথা শোনা যাবে না। একদম তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্টাইলে রাজ্যপাল চলছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আমি সব, রাজ্য়পাল বলছেন আমি সব। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আমি আচার্য হব। রাজ্যপাল বলছেন আমি আচার্য হিসাবে রাজ্যপাল উপাচার্য হব।’

এই প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কটাক্ষের সুরে জানান, ‘উনি আচার্য, উনিই উপাচার্য। উনি কী করবেন করবেন না তা জানি না। পারলে এবার রেজিস্ট্রারও হয়ে যান। দরকারে ছাত্রের সিটেও বসে পড়বেন। অসুবিধা কী আছে। আচার্যই উপাচার্য এটা তো কোনওদিন শুনিনি। এখন শুনছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 5 =