সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে দুই পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে

জুনিয়র চিকিৎসকদের লাগাতার আন্দোলনের চাপের জেরে তদন্ত কমিটি গঠন করল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগেই সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে এই দুই তদন্ত কমিটি গঠন করা হল। এই দুর্নীতিতে মূলত উঠেছে বেড দুর্নীতি ও সেন্ট্রাল ল্যাবে দুর্ব্যবস্থার অভিযোগ। এর পাশাপাশি ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ভেট পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে সুদীপ্তর। এই সব ঘটনার জেরে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে অন্তত সূত্রে খবর এমনটাই। ফলে শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা আরজি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায় এবার আরও চাপে।

সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে দুটো আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডক্টর সৌমিত্র ঘোষ এর নেতৃত্বে এগারো সদস্যের তদন্ত কমিটি এই বিষয়টির তদন্ত ভার নিয়েছে।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, আরজি কর ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন চিকিৎসক সুদীপ্ত রায়। অভিযোগ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ধাঁচেই দুর্নীতি হয়েছে মেডিক্যাল কলেজে। এই মর্মে স্বাস্থ্যভবনে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এই অভিযোগকে হাতিয়ার করেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি ছিল, সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হয়। যার প্রেক্ষিতে এই কমিটি গঠিত হয়। প্রতিটি তদন্ত কমিটিতেই জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি হিসেবে দু’জন পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনি এবং দু’জন ইন্টার্নও রয়েছেন।

এদিকে আরজি কর ধর্ষণ-খুনের মামলার পাশাপাশি দুর্নীতি মামলারও তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জানা গিয়েছে, সুদীপ্ত রায়ের বাজেয়াপ্ত করা তিনটি ফোনের সিডিআর খতিয়ে দেখছে ইডি। এর আগে, এই তিন ফোন বাজেয়াপ্ত ইস্যুতে সুদীপ্ত রায় বলেন, ’আমরা সত্যের পথে রয়েছি, আমাদেরই জয় হবে। প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির অভিযোগের ভিত্তিতে তল্লাশি হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, আরজি কর দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। রিপোর্ট বলছে, তিনি তৎকালীন রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্তর কাছে অভিযোগ করলেও, লাভের লাভ হয়নি বলে তিনি অভিযোগ তোলেন। এরপরই সুদীপ্তকে তদন্তের আওতায় নিয়ে আসে ইডি। এই সব বিতর্ক, অভিযোগের ভিত্তিতেই এবার প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হল।

ইতিমধ্যেই আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে। আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে সুদীপ্তকে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন তাঁর সদস্যপদ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 4 =