মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে, দাবি শুভেন্দুর

২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু তার আগেই ২০২৫ সালে রাজ্যে বিধানসভা ভোট হোক, এমনই পরামর্শ দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার পুলিশের একাংশ সিআইডির প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছেন। দুর্নীতির সঙ্গে পুলিশ ও সিআইডির একটা অংশ জড়িয়ে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই মন্তব্য করেন। আর এই প্রসঙ্গ টেনেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী সঠিক কথা বলেছেন। পুলিশ ও সিআইডি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে। কিন্তু তাদের দুর্নীতি করতে বাধ্য করা হয়েছে। একইসঙ্গে এদিন শুভেন্দু এও বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে। ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে ১৬০০ কোটি টাকা তৃণমূল ঘরে তুলেছে। ডিয়ার লটারির প্রসঙ্গও এদিন তিনি আরও একবার উত্থাপন করেন। পশ্চিমবঙ্গে টেন্ডার দুর্নীতি চলছে। ট্যাব থেকে সাইকেল, সিসিটিভি ইনস্টলেশন থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। এই সব সংস্থা ইলেক্টোরাল বন্ডে টাকা দিয়েছে। এমনই অভিযোগ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেইসব কোম্পানিকে  ব্ল্যাকলিস্ট করে হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানানো হয়। ইলেক্টোরাল বন্ডে নেওয়া টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হোক। তা না হলে ভারত সেবাশ্রম সংঘ, রামকৃষ্ণ মিশন প্রকৃতি সংস্থাকে সেই টাকা দিয়ে দেওয়া হোক, এদিন এমনটাও দাবি করতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। সঙ্গে তিনি এও জানান, নির্বাচনী বন্ডে তৃণমূল কংগ্রেস ১৬০০ কোটি টাকা পেয়েছে। যদি বৈধভাবে টাকা নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে ফেরত দিন। সেই জোরালো দাবি তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পুলিশ কর্তাকে দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির থেকে নির্বাচনী বন্ডের টাকা সংগ্রহ করেছেন। সেই দাবিও করেন বিরোধী দলনেতা।

এদিকে আবার  ট্যাবকাণ্ডে জামতাড়া গ্যাং জড়িত এবং তারা বিরোধী দলের রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় রয়েছে, বৃহস্পতিবার এ কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এর জবাবে শুক্রবার প্রমাণ দেখানোর দাবি তুললেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।এর পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘ট্যাব জালিয়াতি বিষয় কোনও গ্যাং যদি রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে থাকে, সেটা তৃণমূলের লোক বা শিক্ষা দফতরের লোক বা সেটা তাঁর অর্থ দফতরের লোক ৷ এর সঙ্গে বিরোধীদের কোনও লেনাদেনা নেই ৷ আর যদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযের কাছে কোনও প্রমাণ থাকে, তাহলে উনি সেটা প্রকাশ করুন। যদি বিজেপির কেউ থাকেন তাহলে সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। তৃণমূলের কেউ থাকলে তাঁদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হোক।’

আলু রফতানিতে মুখ্যমন্ত্রীর রাশ টানার কথায় নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু বলেন, “হুগলি ও বর্ধমানের হিমঘরে আলু মজুত রয়েছে ৷ ওই বিষয়ে ওখানকার তৃণমূল নেতারাই ভালো বলতে পারবেন ৷ মুখ্যমন্ত্রীর ওদের সঙ্গে কথা বলা উচিত ৷ পূর্ব বর্ধমান ও হুগলির দিকে আলুর বন্ড তৃণমূলের নেতারা কিনে নেন ৷ আর তাই উত্তম কুণ্ডু, স্বপন সামন্ত, বেচারাম মান্নার মতো তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরাই ভালো বলতে পারবেন যে খেলাটা কোথায় হচ্ছে ৷” পাশপাশি তাঁর অভিযোগ, কুলটি থানার আইসি 30 থেকে 50 হাজার টাকা করে নিয়ে আলুর গাড়ি পার করাচ্ছেন ৷

শুভেন্দু আরও বলেন, “অভিজিৎ মণ্ডল (টালা থানার প্রাক্তন ওসি) গ্রেফতার হওয়ার পরে পুলিশের অনেকেই ভয় পেয়েছে ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিজিৎ মণ্ডলকে বাঁচাতে পারেননি ৷ বিনীত গোয়েলকেও বাঁচাতে পারবেন না ৷ মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে ধমক দিচ্ছেন যাতে তারা 2026 সালের নির্বাচনে পার্টির ক্যাডারের মতো কাজ করে ৷ যেভাবে গত লোকসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবারে করেছে ৷”

এদিকে শনিবার রাজ্যের ছ’টি বিধানসভায় উপনির্বাচনের ফল প্রকাশ ৷ এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারীর আশা, সামগ্রিকভাবে যেখানে যেখানে জনমত প্রতিফলিত হয়েছে সেখানে বিজেপির ফল ভালো হবে ৷ মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে এনডিএ জোটই ক্ষমতায় ফিরবে বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি ৷ তবে রাজ্যের ছ’টি উপ-নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি তিনি ৷ তাঁর কথায়, ‘পশ্চিমবঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হয় না সেটা সবাই জানে।’

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − one =