সুজয়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ ইডি-র

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর বিরুদ্ধে ১২৬ পাতার চার্জশিট পেশ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সঙ্গে ৭ হাজার পাতার নথিও জমা দিয়েছে তদন্তকারীরা। কালীঘাটের কাকু ছাড়াও চার্জশিটে নাম রয়েছে তাঁর সংস্থার। ২০ কোটি টাকার লেনদেনের উল্লেখের পাশাপাশি আরও ৩ কোটি টাকার হদিশ পাওয়া গিয়েছে বলেও লেখা হয়েছে চার্জশিটে। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে সামনে এসেছে ২৩ কোটির খোঁজ। আর তা শুধু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর সূত্র ধরেই। পাশাপাশি চার্জশিটে এও উল্লেখ করা হয়েছে, কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে যোগ ছিল মানিক ভট্টাচার্য, কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডলেরও। প্রসঙ্গত, নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় কালীঘাটের কাকু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে গ্রেফতার করে ইডি। এই গ্রেফতারি ৫৯ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ করা হল। ১২৬ পাতার মূল চার্জশিটে নাম রয়েছে কাকুর। এছাড়া ৭ হাজার পাতার নথিও জমা পড়েছে। এদিকে এই চার্জশিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের মামলার চার্জশিটের ৭৫ নম্বর পাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ রয়েছে। সূত্রের দাবি, চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে সুজয় ভদ্র যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সূত্র মারফত আরও দাবি করা হচ্ছে, এককালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ফিনান্সিয়াল ম্যাটার’ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র দেখভাল করতেন, সেই কথাও উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। এর পাশাপাশি ইডির দাবি, মানিক ভট্টাচার্যেরও বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। সূত্রের খবর, চার্জশিটে বলা হয়েছে অভিষেকের বার্তা মানিক ভট্টাচার্যের কাছে পৌঁছে দিতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।

যদিও এই চার্জশিটে অভিযুক্ত বা সাক্ষী হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নাম উল্লেখ করা হয়নি। কেবল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র যে অভিষেকের যোগাযোগ ছিল বা সম্পর্ক ছিল, সেটা বোঝানোর জন্যই উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি মানিকের যে প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে, সেখানেও কী বার্তা সুজয় পৌঁছে দিতেন তাও এই প্রথম চার্জশিটে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা নেই বলেই জানা যাচ্ছে। উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে তাঁর পরিচিতির কথা অতীতে নিজেই জানিয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। বলেছিলেন, ‘আমার সাহেব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি ওনার অফিসে চাকরি করি। আমার সাহেবকে ছোঁয়ার ক্ষমতা কারও নেই।’

এদিকে ইডির হাতে গ্রেফতার হলেও কালীঘাটের কাকু আপাতত এসএসকেএমে ভর্তি। এদিকে তাঁর বাইপাস সার্জারি হবে বলে সূত্রের খবর। তবে সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করতে নারাজ কালীঘাটের কাকু। এ নিয়ে নিম্ন আদালতে আবেদন করেছিলেন। বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করতে চান তিনি। নিম্ন আদালত আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের শরনাপন্ন হয়েছেন তিনি। কোনওভাবেই সরকারি হাসপাতালে এই বাইপাস সার্জারি করাতে রাজি নন তিনি। আদালত সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 2 =