দ্রোহ কার্নিভাল মামলায় মুখ পুড়ল রাজ্য়ের, ১৬৩ ধারা খারিজ

দ্রোহ কার্নিভাল মামলায় এবার আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য। কারণ, পুলিশের জারি করা ১৬৩ ধারা খারিজ করে দ্রোহ কার্নিভালের অনুমতি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রবিকিষাণ কাপুর। চিকিৎসকদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘পুলিশ যে আদেশ দিয়েছিল, তা বাতিল। শান্তিপূর্ণভাবে যাতে দ্রোহ কার্নিভাল ও পুজো কার্নিভাল হয়, কোনও বিরোধ না হয়, তার জন্য আদালতের কাছে আমাদের প্রস্তাব ছিল রানি রাসমনি অ্যাভিনিউ থেকে করা হোক। আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করেছে।’ এরই পাশাপাশি আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এও জানান, সরকারের তরফ থেকে অ্যাডভোকেট জেনারেল এই আদেশে স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন, সেটাও বিচারপতি খারিজ করে দেন। তিনি স্পষ্ট করে দেন, দ্রোহ কার্নিভাল হবে। এদিকে সূত্রে খবর,দ্রোহ কার্নিভালে যোগ দিতে যাচ্ছেন খোদ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

প্রসঙ্গত, চিকিৎসকদের দ্রোহ কার্নিভাল রুখতে পুলিশের তরফ থেকে জমায়েত রুখতে ১৬৩ ধারা জারি করা হয়।  হাইকোর্টের নির্দেশের অপব্যাখ্যা করছে পুলিশ, এই বিষয়টি জানিয়ে পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মাকে ইমেল করেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে ইমেল করেন প্রধান বিচারপতির কাছেও। এদিন অবকাশকালীন বেঞ্চে মামলা চলকালীন বিচারপতি জানতে চান, রাজ্য কার্নিভাল সামাল দিতে পারছে কি না তা নিয়ে। উত্তরে চিকিৎসকদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, রানি রাসমনিতে শেষ হয়ে যাবে দ্রোহ কার্নিভাল। যেটা কার্নিভালের চেয়ে অনেক দূরে। এদিকে রাজ্যের তরফে এজি কিশোর দত্তের দাবি, রেড রোডের পাশেই রানি রাসমনি। এরই রেশ ধরে বিচারপতি এজি-কেই একটা সুবিধা মতো জায়গার কথা জানতে চান। সঙ্গে এও জানান, সেই জায়গা পর্যন্তই ওঁদের অনুমতি দেওয়া হবে।

এরপর এজি সওয়াল করেন, এটা বুধবার হলে এমন কিছু সমস্যা হত না। মঙ্গলবারই করতে চাইছে মানে উদ্দেশ্য স্পষ্ট। মাত্র ৫০-৬০ মিটার দূরেই পালিত হচ্ছে দুর্গা পুজো কার্নিভাল। সেটাই সমস্যা। তখন বিচারপতি এজিকেই বলেন, ‘দুটো র‍্যালি শান্তিপূর্ণ হতে পারে, এমন কিছু পরামর্শ দিন।’ এজি তখন জানান, ‘আরআর অ্যাভিনিউ থেকে নিরঞ্জনের প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’ তখন মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘সেটা অর্ডারে নেই। চিকিৎসকরা গুন্ডা নয়, যে গোলমাল পাকাবে। তেমন হলে গার্ডরেল করা হোক।’ তখন এজি আর্জি জানান, যাতে দ্রোহ কার্নিভাল রামলীলা ময়দানে করা হয়। এরপরই রাজ্যের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হন বিচারপতি। কমিশনারের অর্ডারের নিন্দা করে বিচারপতি বলেন, ‘বার বার আদালত আপনাদের নির্দেশ দিয়েছে র‍্যালির অনুমতি দিন। তারপরেও একই আচরণ।’ এরপর পুলিশের জারি করা ১৬৩ ধারা খারিজ করে দ্রোহ কার্নিভালের নির্দেশ দেন বিচারপতি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 3 =