কোনটা বেশি উপকারী, ডাল না সোয়াবিন!

আমাদের দেশের একটা বিরাট অংশের জনগণ নিরামিষ খাবার খান। ফলে তাঁদের মধ্যে অনেকেরই শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কারণেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাঁদের এমন সব নিরামিষ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন। এই তালিকায় সবার আগে আসবে ডাল আর সোয়াবিনেরা নামই।

তবে এই দুই খাবার নিয়মিত খাওয়ার পরও অনেকের মনে প্রশ্ন আসে যে, ডাল না সোয়াবিন, কোন খাবারে রয়েছে বেশি প্রোটিন তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকে যায়-ই। এই প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদরা জানান, আমাদের মতো অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দেশে ডালের কোনও বিকল্প নেই। এই খাবারে রয়েছে প্রোটিন থেকে শুরু করে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজের ভাণ্ডার। তাই নিয়মিত ডাল খেলে যে শরীর সুস্থ থাকবে, এটা বলাই বাহুল্য। এছাড়া এই খাবারে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্ব। আর এই কার্বোহাইড্রেট কিন্তু শরীরকে শক্তি জোগানোর কাজে একাই একশো। তাই দৈহিক পরিশ্রমকারী ব্যক্তিরা দিনে ১ থেকে ২ বাটি ডাল অনায়াসে খেতে পারেন। এতেই দেহের পুষ্টির ঘাটতি মিটে যাবে। অন্যদিকে সোয়াবিনকে পুষ্টির খনি বললেও কম বলা হয়। এতে রয়েছে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফাইবার, কার্ব, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি সহ অন্যান্য জরুরি উপাদান। তাই শরীরকে একাধিক ছোট-বড় রোগের হাত থেকে রক্ষা করার কাজে এর জুড়ি মেলা ভার। এছাড়াও সোয়াবিনে মজুত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তাই দেহে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে এই খাবারটি অবশ্যই পাতে রাখুন।

এই প্রসঙ্গে একটা পরিসংখ্যানও দিয়েছেন তাঁরা।  প্রতি ১০০ গ্রামে সোয়াবিন এবং ডালে মোটামুটি ১৮ থেকে ২০ গ্রাম প্রোটিন থাকে। তাই প্রোটিনের পরিমাণের সংখ্যাগত হিসাবে এই দুটি খাবারকে আলাদা করা সম্ভব নয়।

তবে পুষ্টিবিদরা এটাও জানাচ্ছেন, এই দুই ধরনের প্রোটিনের গুণের মধ্যে কিন্তু বিরাট তফাত রয়েছে। ডালের তুলনায় সোয়াবিনের প্রোটিন অনেক বেশি উপকারী। আসলে সোয়াবিনের প্রোটিনের অ্যামাইনো অ্যাসিড ডিস্ট্রিবিউশন খুবই ভালো। তাই এই ধরনের প্রোটিনকে শরীর খুব সহজে গ্রহণ করে নেয়।

ফলে সোয়াবিন ও ডাল এই দুটিই খুব উপকারী। তাই এই দুই খাবারের মধ্যে বেশি বিবেচনা করে লাভ নেই। বরং পকেট বুঝে এই দুটি খাবারকেই পাতে রাখার চেষ্টা করতে হবে বলে মত তাঁদের। এতে দেহের প্রোটিন, খনিজ এবং ভিটামিনের চাহিদা মেটাতে পারবেন। এমনকী দূরে থাকবে একাধিক ছোট-বড় রোগ। ফলে আমিশাষী থেকে নিরামিশাষী- সকলের ডায়েটেই এই দুই খাবারকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।

তবে যাঁদের ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা রয়েছে। তাঁরা যতটা সম্ভব ডাল, সোয়াবিন বা অন্যান্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। নচেৎ সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। অপরদিকে যাঁরা কিডনির অসুখে আক্রান্ত, তাঁরাও কিন্তু অত্যধিক পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার খাবেন না। এতেও জটিলতা বাড়তে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 − 2 =