আরজি করের ঘটনায় সঞ্জয়ের সোমবার থেকে শুরু বিচারপর্ব, বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স-ই মূল হাতিয়ার সিবিআইয়ের

সঞ্জয় রাইয়ের বিরুদ্ধে পাওয়াবায়োলজিক্যাল এভিডেন্সআরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মামলায় বড়হাতিয়ার এই প্রমাণের ভিত্তিতেই বিচারপর্ব এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় সিবিআই। এদিকে সোমবার থেকেই বিচারপর্ব শুরু হচ্ছে সঞ্জয় রাইয়ের। সূত্রে খবর, প্রথমদিন থেকেই সাক্ষ‌্যগ্রহণ শুরু হতে পারে। প্রাথমিকভাবে ৫১ জনের সাক্ষ‌্য নিতে পারে আদালত। যেহেতু শিয়ালদহ আদালতে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে পেশ হওয়া চার্জশিটে সাক্ষীর তালিকার উপরের দিকে রয়েছে নির্যাতিতার পরিবার ও পরিচিতদের নাম সেই কারণে বিচারপর্বের শুরুর দিকে আদালত তাঁদের সাক্ষ‌্য নিতে পারে বলেই জানা যাচ্ছে।

সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, এইবায়োলজিক‌্যাল এভিডেন্সই প্রমাণ দিয়েছে যে, আর জি করে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সঞ্জয় রাই একমাত্র অভিযুক্ত। আদালতেও বিভিন্ন সময় এইবায়োলজিক্যাল এভিডেন্স’-এর বিষয়টি উল্লেখ করতে দেখা গেছে সিবিআইকে। আর জি কর হাসপাতালের চারতলায় সেমিনার হল থেকে নির্যাতিতার দেহ উদ্ধার হওয়ার পর তাঁর বিভিন্ন পোশাক, কম্বল, বিছানার চাদর, কাপড়ের টুকরো, ম‌্যাট্রেসের টুকরো, সিন্থেটিক তুলো কলকাতা পুলিশ সংগ্রহ করে। এছাড়াও নমুনা হিসাবে সংগ্রহ করা হয় নির্যাতিতার নখ, রক্ত, ঠোঁট, যৌনাঙ্গের সোয়াব। ঘটনাস্থল থেকে  উদ্ধার হয় চুলও। এছাড়াও অভিযুক্ত সঞ্জয়ের প‌্যান্ট ও স্লিপার উদ্ধার হয় তার ব‌্যারাক থেকে। ময়নাতদন্তের সময় নির্যাতিতার শরীরের উপরের অংশ থেকে পাওয়া সোয়াবও সংগ্রহ করে রাখা হয়। এই প্রত্যেকটি নমুনাই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে সিবিআইয়ের হাতে সিল করা প‌্যাকেটে তুলে ধরা হয়। ক্রমে ওই নমুনাগুলি সিবিআই কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল‌্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন‌্য পাঠায়।

সিবিআই সূত্রের খবর, নির্যাতিতার যৌনাঙ্গ থেকে উদ্ধার করা সোয়াব বা তরল পদার্থ পরীক্ষা করে কেন্দ্রীয় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাই জানান যে, সেখানে কোনও পুরুষের সিমেনের সন্ধান মেলেনি। এই ক্ষেত্রে নির্যাতিতার শরীরের অন‌্যান‌্য অংশ থেকে উদ্ধার হওয়া সোয়াব পরীক্ষার উপরই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কারণ, সোয়াবের ডিএনএ পরীক্ষা না হলে কোনওমতেই বোঝা সম্ভব নয় যে, আসল অপরাধী কে। বিশেষ করে ধর্ষণের অভিযুক্ত কতজন, তার জন‌্যও প্রয়োজন ডিএনএ পরীক্ষা। সেই কারণে অতিরিক্ত ব‌্যয় করেও একাধিক নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করায় সিবিআই। ওই নমুনাগুলোই সিবিআইয়ের পরিভাষায়বায়োলজিক‌্যাল এভিডেন্সসিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, আর জি করের চারতলায় সেমিনার হল তথা ঘটনাস্থল থেকে চুল বাপিউবিক হেয়ারউদ্ধার হয়েছে। সেটি যে সঞ্জয়ের, ডিএনএ পরীক্ষায় তার প্রমাণ মিলেছে। নির্যাতিতার দেহের উপরের অংশ পরীক্ষা করে সেখানে লালারস বা সোয়াবের চিহ্ন মেলে। ওই সোয়াব কেন্দ্রীয় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেন যে, ডিএনএ ধৃত সঞ্জয়েরই। এ ছাড়াও ঠোঁটের সোয়াবেরও ডিএনএ মিলে গিয়েছে। এ ছাড়াও সঞ্জয়ের মেডিকো লিগ‌্যাল পরীক্ষাও করায় সিবিআই। তারও সিমেন সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল‌্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয় বলে জানিয়েছে সিবিআই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − two =